আজ ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সময় : দুপুর ২:৩৩

বার : রবিবার

ঋতু : গ্রীষ্মকাল

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৭৯দিন আওয়ামীকরণের চূড়ান্ত পর্যায়ে পুলিশ বাহিনী

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৭৯দিন

আওয়ামীকরণের চূড়ান্ত পর্যায়ে পুলিশ বাহিনী


শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৭৯দিন

শেখ হাসিনার দু:শাসনের ৫৩৭৯দিন

নিজস্ব প্রতিনিধি

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনে পুরো দলীয়করণ করা হয়েছে পুলিশ বাহিনীকে। যদিও ইন্ডিয়াপন্থী আওয়ামী পত্রিকা টেলিভিশন চ্যানেল গুলো চার দলীয় জোটের সরকারের শেষ সময়ে এসআই পদে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে দিনের ও দিন দলীয়করণের বয়ান দিতেন। এক পর্যায়ে মঈন উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে জরুরী আইনের সরকার চার দলীয় জোট সরকারের সময়ে নিয়োগ পাওয়া পুলিশ ও বিসিএস ক্যাডার ব্যাচ বাতিল ঘোষণা করেছিল। অথচ, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার দু:শাসনের অন্যতম সহযোগী হচ্ছে পুলিশ বাহিনী।

পুলিশ বাহিনীকে রীতিমত আওয়ামী লীগের তল্পিবাহক লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন অবৈধ সরকার। দেখে নেওয়া যেতে পারে পুলিশ নিজেদের জরিপে কি বলছে।

২০২০ সালে পুলিশ সদর দপ্তর ‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার ও উন্নয়নে মাঠপর্যায়ের মতামত ২০২০’ শিরোনামে এক জরিপ করেছিলো। জরিপে কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর পদবির ৪১১ জন পুলিশ সদস্যের মতামত নেওয়া হয়। এতে ৮টি রেঞ্জ, ৮টি মেট্রোপলিটন পুলিশ, পার্বত্য অঞ্চলসহ ৬৪ জেলা ও বিশেষায়িত ইউনিটের পুলিশ সদস্যরা অংশ নেন।

জরিপে দেখা গেছে, রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি, মামলার তদন্তে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, মামলা না নিতে চাপ, আসামি ছাড়তে তদবির, স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকা, নিয়োগ-পদোন্নতিসহ নানা বিষয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় তাঁদের।

বিসিএসে উত্তীর্ণ হলেও আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান না হলে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়া হয় না। বিসিএস ক্যাডার হিসেবে নিয়োগে পিএসসির সুপারিশ পেলেও পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ৩৩ থেকে ৩৮তম বিসিএস পর্যন্ত ৬৩১ জন নিয়োগ পাননি। অর্থাৎ, যোগ্যতার চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয়েই গত ১৫ বছরে পুলিশে নিয়োগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

বিসিএসের সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণের পর চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়ার আগে ১৬ ধরনের তথ্য পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে যাচাই করা হয়। এসব তথ্য যাচাইয়ের সঙ্গে প্রার্থী ও তাঁদের পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার তথ্যও এখন প্রতিবেদনে তুলে ধরা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যরা কেবলমাত্র আওয়ামী লীগ করলেই নিয়োগ দেওয়া হয়।

বিভিন্ন বিসিএসে নিয়োগে পিএসসির সুপারিশ এবং তাঁদের গেজেটভুক্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ছয়টি বিসিএসে ১৮ হাজার ৮৫৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। তাঁদের মধ্যে ১৮ হাজার ২২২ জন নিয়োগ পেয়েছেন, নিয়োগ পাননি ৬৩১ জন। নিয়োগ বঞ্চিত অনেক প্রার্থী ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের সুপারিশ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের প্রত্যয়ন পত্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিলেও কাজ হচ্ছে না। বলা হয়েছে, এসব প্রার্থীর পরিবার বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জড়িত।

অতীতে নিয়োগ বঞ্চিত এক প্রার্থীর বাবা বলেন, মেয়ের চাকরি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভ্যারিফিকেশন করার সময় বলেন, ‘আপনার একটা রাজনৈতিক পরিচিতি ছিল। আপনি একসময় বিএনপি করতেন। আপনি একজন প্রসিদ্ধ মানুষ। আপনাকে সবাই চেনেন। তাই বিষয়টি আমরা অমিট করতে পারব না।’

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, চূড়ান্তভাবে নিয়োগের আগে প্রার্থীদের পরিবারের সদস্য ছাড়াও এখন তাঁদের আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা দেখা হয়। ৩৫তম বিসিএস থেকে বিষয়গুলো বেশি দেখা হচ্ছে। ফলে আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে অনেকেই চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাচ্ছেন না।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category